লাওহে মাহফুযে সংরক্ষিত একজন মহিলার দুআ।==শায়েখ ডঃ আব্দুস সালাম আজাদী।

[ অনেক শিক্ষামূলক তথ্য। মেয়েদেরকে এমন একটা সুন্দর জীবনের উপযোগী হিসেবে গড়ার জন্য আল্লাহ্ কবুল করে নিন ]

অনেক পুরুষের দুয়া কুরআনে আল্লাহ সংরক্ষণ করে রেখেছেন, যে গুলো পড়ি, সালাতে, সালাতের বাইরে, আমরা সিক্ত হই, আপ্লুত হই, এবং সেই দুয়ার যে ফল তারা পেয়েছিলেন তার জন্য আল্লাহ তাআলার কাছে নিবেদন করি।

কুরআনে কিছু মহিলাকে সে সম্মাননা দেয়া হয়েছে, তাদের দুয়া গুলোও আল্লাহ গুছিয়ে রেখেছেন, তার কাজ গুলোকেও আল্লাহ জীবন্ত রেখেছেন। মানুষ জানবে একজন নারী হয়েও তিনি বা তারা আল্লাহর কত কাছাকাছি যাইতে পেরেছিলেন।

একজন মহিলার নাম ছিলো হান্না, স্বামীর নাম ছিলো ইমরান, যদিও ইমরান নবী ছিলেন না, তারপরেও আল্লাহ তার পরিবার কে পছন্দ করেছিলেন।

হান্না বন্ধা মহিলা ছিলেন। পাখির বাচ্চাকে আদার খাওয়ানো দেখে তার মনে বাচ্চার শখ প্রবল হয়ে ওঠে। বন্ধ্যা, আবার বৃদ্ধা, স্বামীও অশতীপর, বাচ্চা হবার সম্ভাবনা স্বাভবিক প্রক্রিয়ায় কই?!! কিন্তু বাচ্চা চাইলেন। আল্লাহ কবুল ও করলেন। পেটে বাচ্চা আসলো। অমনি স্বামীও ইন্তেকাল করলেন। ভীষণ কষ্টেও তিনি ভেংগে পড়লেন না। বরং দুয়া করলেন, ইতিহাস বিস্ময় নেত্রে তাকিয়ে দেখলো, ইথারে ইথারে তা ভেসে বেড়ালো, লাওহে মাহফুযে সে দুয়া খোদিত হয়ে গেল “রাব্বি ইন্নি নাযারতু লাকা মা ফী বাতনী মুহাররান” ও আমার রাব্ব, আমি আমার পেটে যাই দিয়েছো তাকে আমি নিয়ত করলাম মুহাররার বানাবো। দ্বিন ও দ্বীনী প্রতিষ্ঠানের সেবার জন্য উৎসর্গ কারী হিসেবে ওয়াকফ করে দেবো।

বাচ্চা হয়ে গেলো, তিনি মেয়ে হয়ে জন্মালেন, আল্লাহ কে বললেনঃ আল্লাহ, আমি তো মুহাররার করতে চেয়েছিলাম আমার পেটের বাচ্চাকে, কিন্তু ওটা তো মেয়ে হলো, আমার নিয়তের কি হবে?? আল্লাহ হান্নাকে শুনিয়ে দিলেন, সব এই মেয়ে আলাদা, ছেলে হলেও এই মেয়ের মত হবে না।

হান্না ধাতস্ত হলেনঃ তাই তো, এই দ্বায়িত্ব আমার না, এটা আমার রব্বের দ্বায়িত্ব। তবে আল্লাহ, আমি এই মেয়েকে মারয়াম, যার অর্থ ‘সুন্দরী, সুউচ্চ, একধরণের গাছ, যার ঘন সবুজ পাতা হয়, ফুল হয় গাঢ় লাল’। আল্লাহ, আমি একে এবং এর সন্তানকে শয়তানের থাবা থেকে বাঁচার জন্য তোমার আশ্রয় চাচ্ছি।

কী অপূর্ব দুয়া, বাবা নেই মারা গেছেন পেটে থাকতেই, নিজেও বাঁচবেন কিনা জানা নেই। পেটে থাকতেই দ্বীনের জন্য উৎসর্গ করে দুয়া করেন, প্রসব হওয়ার পরে আল্লাহর কাছে হাওলা করে দিলেন, তাঁর আশ্রয়ে বাচ্চাটাকে রাখলেন।

আল্লাহ বলেন, দুয়া তিনি অনেকেরই কবুল করেছেন, তবে হান্নার দুয়া টা ‘কাবুলুন হাসানুন’ সুন্দর ভাবে কবুল করলেন, মেয়েটাকে বড় করার দ্বায়িত্ব সুন্দর ভাবে নিলেন এবং যাকারিয়া নবীর তত্বাবধানে এই মেয়েকে রেখে দিলেন।

এমন হলো এই মেয়েকে যে দেখে হিংসা জাগে, যার মত সন্তান পেতে নবীদের ও মন কাঁদে, যাকে কোলে নিতে বনী ইস্রাঈল লটারী করে, যাকে দেখার জন্য মানুষ পাগল হয়ে যায়। ক্ষুধা লাগলে মানুষ আর খাওয়াবে কি, আল্লাহ জান্নাত থেকে খাবার পাঠান, তৃষ্ণা পেলেন জান্নাতি কাওসার অবারিত। ইন্নাল্লাহা ইয়ারযুকু মান ইয়াশা’ বিগায়রি হিসাব……………

আহারে, আমাদের সন্তান হয়, পেটে থাকতেই গুনতে থাকি টাকা, ভাবতে থাকি দুনিয়া। ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার বানাবো। পৃথিবীর সেরা নায়ক নায়িকা বানাবো। জন্ম হলেও দুয়া মনে আসেনা। কিছুই বলিনা। আনন্দ আর আনন্দ। নাম টাও রাখি টবি, গেলি, পলি, নিঝুম, অনিকেত, নাচিকেতা, নিবীড়, রংধনু, নানান নায়ক নায়িকার নামের সাথে মেলাই ফারদিন, শাররুখ, এবং গরুর লেজ বা বানরের ঠাং…………..

লাওহে মাহফুযে সংরক্ষিত একজন মহিলার দুআ।==শায়েখ ডঃ আব্দুস সালাম আজাদী।

About The Author
-

You may use these HTML tags and attributes: <a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>