রুহানিয়্যাত বা আধ্যাত্মিকতা ইসলামের এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এর মূল কথা হলো আত্মাকে পরিশুদ্ধ করা। আল্লাহ তাআলা মহানবী (সা) কে যে কয়টা দ্বায়িত্ব দিয়ে দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন, তার মধ্যে পরিশুদ্ধি হলো অন্যতম। এই পরিশুদ্ধি আনতে হয় মানুষের আত্মায়। কারণ আল্লাহ তাআলা বলেছেনঃ “সেই ব্যক্তিই সফলকাম, যে আত্মাকে পরিশুদ্ধ করেছে। আর সেই হয়ে গেল বিফল বা অকৃতকার্য, যে আত্মাকে সর্বনাশ করে দিয়েছে।” আত্মা হলো মানূষের যাবতীয় ভাল মন্দের আধার। ভাল মন্দের প্রভাব ও সেখানে পড়ে যুগপৎ ভাবে। মানুষ যখন ভাল কাজ করে, রূহ বা আত্মা তখন বড়ই খুশি হয়। আর সে যখন খারাপ কাজ করে,তখন রূহ বড়ই বেজার হয়। সেখানে পড়ে যায় একটা কালো দাগ। তাওবাহ করে আবার ভালো পথে না আসা পর্যন্ত সে দাগ বাড়তেই থাকে। এক সময় গোটা রূহটাই কালো হয়ে যায়। আর একবার সেটা কালো হয়ে গেলে, ভালকে ভাল ও মন্দ কে মন্দ হিসেবে রূহ আর চিনতে পারে না। সে সময় মানুষের ঈমান একেবারেই লোপ পেয়ে বসে। এই জন্য মহানবী (সা) বলেছেনঃ যখন ভাল কাজ তোমাকে আনন্দ দেবে, আর খারাপ কাজ তোমার মনকে খারাপ করে দেবে, তখন বুঝবে তোমার ঈমান পরিপূর্ণ আছে।
আমাদের এই রূহ কে শক্তিশালী করার দ্বায়িত্ব আমাদের সবার। তাকে শক্তিশালী করতে না পারলে, আমাদের ঈমানী যিন্দেগী জান্নাতের দিকে দ্রুত ধাবিত করা সম্ভব হয় না। রূহ যখন উন্নত হয় তখন তার যাত্রা থাকে উর্ধাকাশের দিকে। আখিরাত তখন হয়ে ওঠে একান্ত পাওয়ার বস্তু। আল্লাহর দীদারের জন্য সে হয় তখন ব্যাকুল। একদিন শুক্রবার মহানবী (সা) খুৎবাহ দিচ্ছিলেন মাসজিদে নাবাওয়িতে। গল্পচ্ছলে তিনি বললেনঃ “এক বান্দাহ কে আল্লাহ অনুমতি দিয়েছেন যে, সে চাইলে দুনিয়াতে কিয়ামত পর্যন্ত বাদশাহী করতে পারবে। অথবা চাইলে এখন আললাহর আহবানে সাড়া দিয়ে তাঁর কাছে চলে যেতে পারে। কিন্তু বান্দাহটি দ্বিতীয় অপশন গ্রহন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।“ আবু বাকর (রা) এ গল্প শুনে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলেন। সমস্ত মানুষ তার এই ক্রন্দনে তাজ্জব বনে গেল। তারা আবু বাকরের (রা) কাছে জানতে চাইল তাঁর এই কান্না কাটার কারণ কি। তিনি বললেনঃ “যে বান্দাহ কে আল্লাহ অনুমতি বা ঐ স্বাধীনতা দিয়েছেন, তিনি আর কেও নন, তিনি আমদের নবী। তিনি বোধ হ্য় আমদের ছেড়ে আল্লাহর কাছে যাওয়াটাকে প্রাধান্য দিলেন।” সত্যি বলতে কি তার পরের সোমবার আমাদের নবী (সা) ‘ইলা আররাফিক আলআ’লা’-‘শ্রেষ্ঠ বন্ধুর কাছে যাচ্ছি’ বলে বিদায় নিয়ে চলে যান। দুনিয়ার বাদশাহী তাঁকে টানতে পারিনি, আল্লাহর দীদার তাঁকে উদ্বেল করে তুলেছিল।
রূহ যত পরিষ্কার হয়, পরিশুদ্ধ হয়, ততবেশি আমাদের চিন্তা শক্তির প্রখরতা বাড়ে। আমাদের দৃষ্টি হয় অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তৃত। পরিস্কার রূহের অধিকারীরা যে সব জিনিষ জানতে কিংবা বুঝতে পারে, সাধারণ মানুষের কাছে তা অসম্ভব মনে হতে পারে। এদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেনঃ “এমন এক মানুষ, যে ছিল মৃত (ঈমান হারা), আমি তাকে জীবিত করলাম (ঈমান দিলাম), এবং তার জন্য আলো দিয়ে দিলাম, যা দিয়ে সে মানুষের মাঝে ঘোরে ফেরে। এই মানুষ কি ঐ লোকের মত হবে, যে সব সময় রয়েছে মারাত্মক আঁধারের মাঝে?” রূহ পরিষ্কার হলে আল্লাহর আলো সেখানে স্থান করে নেয়। তখন সে আলোয় মুমিন দেখতে পায় অনেক, অনেক বিষয়, যা সাধারণের চিন্তায় আসেনা। আর গুনাহ করে করে রূহ কালো করে ফেললে, তাতে যেন মোহর মেরে দেয়া হয়। আল্লাহর কথা শুনলে তখন মনে ভয় আসে না। কুরআনের তিলাওয়াত শুনলে ঈমান বৃদ্ধি হয়না। কোন বিপদে পড়লে আল্লাহর প্রতি তাওয়াক্কুল আসেনা। তার হৃদয় তখন ভাল কিছু বোঝেনা; তার কান তখন ভাল কিছু শুনতে চায়না; তার চোখ তখন ভাল কিছু দেখতে চায়না। সে হয়ে যায় জানোয়ারের মত। কিংবা তারচেয়েও জঘন্য।
মানুষের রূহ পরিষ্কারের সবচেয়ে ভাল উপায় হলো আল্লাহ তাআলার ইবাদাতে নিজদেরকে ব্যাপৃত রাখা। আল্লাহর কথা বেশি বেশি স্মরণে রাখা। তাঁর গযব-সন্তুষ্টি, তাঁর জাযা-সাজা, তাঁর তিরস্কার- পুরুস্কার, তাঁর আযাব-মাগফিরাৎ নিয়ে সব সময় চিন্তা ফিকির করা। আমাদের ঈমান কে সব সময় শানিত করা দরকার। ঈমানের নবায়ন হওয়া দরকার প্রতিনিয়ত। মহানবী (সা) তাঁর সাহাবীগণকে প্রায়ই বলতেনঃ তোমাদের ঈমান কে নবায়ন বা রিনিউ করে নাও। কিভাবে নবায়ন করব ইয়া রাসুলাল্লাহ? – এ রকম প্রশ্ন আসলে তিনি বলতেনঃ “বেশি করে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু’ পড়।” এই কালিমায়ে তাইয়িবাহ দেহ-মনে তোলে এক মারাত্মক আলোড়ন। যদি কেউ বুঝে শুনে এই কালিমাহ বার বার পড়ে, দুনিয়ার সমস্ত বন্ধন তখন তার কছে কিছুই মনে হবে না। তাগুতের উচ্ছেদ করে আল্লাহর সার্বভৌমত্য প্রতিষ্ঠার কাজে সে পাগলপারা হয়ে যায়। আমরা অর্থ জানিনা, বা জানলেও তা মানিনা বলে বার বার কালিমাহ পড়েও মনে কোন রকম ঢেউ ওঠেনা।
যেহেতু রূহ আল্লাহ তাআলার আদেশে চলে, কাজেই কুরআন তিলাওয়াতে রূহ বড় বেশি মজা পায়। যে সব আয়াতে আল্লাহর শান্তি ও তাঁর নি’মাত দানের কথা আছে, ও গুলো পড়লে রূহ বড় তৃপ্তি পায়। ফারদ ইবাদাতে ঈমান তাজা হয় বটে, কিন্তু রূহ তাজা হয় নফল ইবাদাতে। বিশেষ করে তা যদি হয় একান্তে, অলক্ষ্যে। যারা এই ধরণের ইবাদাত যত বেশি করেন, তারা তত বেশি আল্লাহর নিকটবর্তী হয়ে যান, তাঁর বন্ধুতে পরিনত হয়ে যান। হয়ে যান আল্লাহর সাক্ষাৎ অলী। তার দেখতে পাওয়া দু’চোখ তখন হয় আল্লাহর (পছন্দনীয়) চোখ, ধরতে পারা দু’হাত হয়ে যায় আল্লাহর (পছন্দনীয়) হাত, আর চলাফেরা করা দু’পা হয়ে যায় আল্লাহর (পছন্দনীয়) পা। এদের দেখলে আল্লাহর কথা মনে পড়ে। তারা আল্লাহর এত বড় বন্ধু হয়ে যান যে, এদের সাথে কেউ শত্রুতা করলে, আল্লাহ তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে দেন।
কিয়ামতে যখন মানুষ অসহায় হয়ে যাবে। সূর্য্যের দারুন খরতেজে মাথার মগয পর্যন্ত টগবগ করে ফূটবে। জিহবা গুলো কুকুরের মত বের হয়ে যাবে ক্ষুধায়, তৃষ্ণায়। সবাই ভয়ে হয়ে যাবে ভীত। তখন আল্লাহ কিছু লোকদেরকে বলবেন, এস, তোমরা আমার আরশের ছায়ায় চলে এস। তাদের মধ্য থেকে কিছু নর নারীর চরিত্র হবে এমন যে, তারা ইবাদাতের মধ্য দিয়েই বড় হয়ে উঠবে। সারাটা জীবন তাদের হবে ইবাদাত দিয়ে সাজানো। তাদের কথা হয় ইবাদাতের জন্য; তাদের চিন্তা থাকে ইবাদাতের দিকে; তাদের সালাত-কুরবানী, জীবন-মরণ, সবই হয় আল্লাহর জন্য। তাদের দিন যায় ইকামাতে দ্বীনের কাজে, আর রাত হয়ে যায় ঘুম অথবা সালাত আদায়ে। তাতাজাফা জুনুবুহুম আনিল মাদাজি’। তাদের পিঠের সাথে বৈরীতা হয় আরামের বিছানার। আর মন শুধু ছুটে যায় আরশের অধিপতির কাছে।
আরশের ছায়া পাওয়া কিছু নর নারীর রূহ এমন হবে যে, একান্তে আল্লাহ কে স্মরণ করলে তাদের দু’চোখে বন্যা নামে। আহ, মহানবী (সা) কত সুন্দর শব্দ চয়ন করেছেন। দু’চোখে বন্যা নামে। ফাফাদাত ‘আয়নাহু। আমরা মানুষের সামনে ভেউ ভেউ করে কেঁদে কেঁদে মুনাজাত করি। এটা সম্ভব। কারণ সবাই যখন কান্দে, অমনি আমার মনও কেঁদে ঊঠতে পারে। একজনের কান্না অন্যের মনকে সংক্রমিত করে বৈকি! একান্তে অলক্ষ্যে আল্লাহর কথা মনে হলে চোখের পানি দু’এক ফোঁটা আসতেও পারে। কিন্তু আল্লাহর প্রেমে পাগল হয়ে, একান্তে অভিসারে তাঁর সাথে মুনাজাত করে (চুপি চুপি কথা বলে), দু’চোখে বন্যা বইয়ে দেয়া চাট্টিখানি কথা নয়। আমি যখন বহুদিন আমার আম্মাকে চোখে দেখিনা, গভীর রাতে তার কথা মনে করে অনেক, অনেক কাঁদি। দু’চোখে বন্যা ঝরে। আমি অনেক মা-হারা সন্তানদের রাতের গভীরে মা, মা করে কাঁদতে দেখেছি। দেখেছি দু’চোখের পানিতে বুক ভাসিয়ে দিতে। তারা কান্দে, কারণ মনের ব্যথা যাকে বলে হালকা হওয়া যেত; বুকের কষ্ট যার হাতের ছোয়ায় পানি হয়ে যেত; অসহায় এ মাথা যার মমতা ভরা বুকে রাখা যেত; সেই মা দুনিয়াতে নেই। তাই কান্না আসে, দু’চোখে বন্যার বেগে পানি আসে। অথচ যাঁর মায়া মায়ের মায়ার চেয়ে শতভাগ বেশি। দুঃখ বেদনা শেষ করার মত যাঁর ক্ষমতা তুলনা করা সম্ভব নয়। শত অন্যায় অপরাধ করলেও যিনি আমাকে একবেলা খাবারও বন্ধ করেন নি। যাঁর রহমাত বরকাত না চাইতেও ঝরে বৃষ্টির মত। যাঁর দিকে তাকিয়ে আনন্দে বেহেশতবাসীদের লক্ষ লক্ষ বছর কেটে যাবে। সেই আল্লাহর কথা একান্তে, সবার অলক্ষ্যে মনে করে কেঁদে কেঁদে দু’চোখে বন্যা নামানোই হল সার্থকতা। সার্থক হয়ে যাবে সেই ব্যক্তি। কারন তার রূহ হলো আসলেই স্বচ্ছ, আসলেই পরিস্কার। আরশের নিচে হবে তার যায়গা।
রুহকে পরিষ্কার করতে ভাল লোকের সাহচর্য অত্যন্ত জরুরী। যে লোক তাকে ভাল পথে থাকতে প্রেরণা যোগাবে। হকের পথে থাকতে পরামর্শ দেবে। ভাল পথে চলতে যেয়ে আঘাৎ আসলে তা বুকে পেতে নিতে সবরের কথা শুনাবে। যাদের পাশে থাকলে আখিরাতের প্রতি আকাংক্ষা বাড়ে, দুনিয়ার মোহ মন থেকে উঠে যায়। যাদের সাথে থাকলে কুরআন হাদিসের জ্ঞান বৃদ্ধি পায়। আল্লাহর প্রেমের পথে নিজকে তৈরী করা যায়। এমন ভাল মানুষ তারা হবেন, যাদের সাথে বসলে রূহ তার খোরাক পায়, আত্মা পায় প্রশান্তি, আর ঈমানের ঘটে প্রবৃদ্ধি। এই সব লোকের সাথে থাকা উচিৎ। আব্দুল্লাহ ইবন রাওয়াহা (রা) যখনই কোন সাহাবীকে দেখতে পেতেন অমনি তাকে নিয়ে বসতেন। বলতেন এস কিছু সময় আল্লাহর উপর ঈমান আনি। তার এই ধরণের বৈঠকের কথা মহানবী (সা) এর কানে গেল। তিনি শুনে খুবই খুশি হলেন। তিনি ইবন রাওয়াহার (রা) জন্য দুয়া করে বললেনঃ ‘আল্লাহ ইবন রাওয়াহা কে রহম করুন। তিনি এমন বৈঠক পছন্দ করেন, যে বৈঠক নিয়ে আল্লাহ ফিরিশতাদের সামনে গর্ব করেন’। শুধু ইবন রাওয়াহা নন, অনুরূপই আমল উমার ইবন আলখাত্তাব, মুয়ায ইবন জাবাল প্রমুখ সাহাবীগণ রিদওয়ানুল্লাহি আলাইহিম আজমাঈন থেকে বর্ণিত হয়েছে। শুধু তাই নয়, আল্লাহ তাআলাও আমাদের লক্ষ্য করে বলছেনঃ ‘তুমি তোমার আত্মাকে এমন লোকদের সাথে ধরে রাখ, যারা তাদের রাব্ব কে রাত দিন ডাকতে থাকে, আল্লাহর সন্তুষ্টিই যাদের একান্ত বাসনা। ওদের দিক থেকে চোখ উঠিয়ে তুমি দুনিয়ার জীবনের সাজ সজ্জার প্রতি উদগ্রীব হয়োনা। তুমি ঐসব লোকদের পথ অনুসরণ করোনা, যাদের আত্মাকে আমার স্মরণ থেকে গাফিল করা হয়েছে, যারা প্রবৃত্তির অনুসরণ করে, আর যাদের সব ব্যাপারেই শুধু বাড়াবাড়ি।” কাজেই ভালো সাহচর্য ঈমানী জীবনে খুবই প্রয়োজন। সে জন্যই বুঝি আল্লাহ আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন যেন আমরা সত্যবাদীদের সাথেই সব সময় থাকি। কুনু মাআস সাদিক্বীন।
রূহকে পরিষ্কার করার জন্য আরেকটা ভাল উপায় হলো মহানবী(সা) সারা দিন, সারা জীবন যে দুয়া গুলো পড়তেন তা বেশি বেশি করে পড়া। তিনি ঘুম যাওয়ার আগে দুয়া পড়তেন। মাঝ রাতে উঠে দুয়া পড়তেন। সকালে ঘুম থেকে উঠেও তার দুয়া ছিল। সালাত আদায়ের আগে পরে, মসজিদে যেতে, বের হতে সব সময় তিনি দুয়া পড়তেন। খাইতে শুইতে, ঘর থেকে বের হতে, ঘরে ঢুকতে, বাজারে রাস্তায় সব যায়গায় তার নির্দিষ্ট দুয়া ছিল। এগুলোর মূল কথা হলো আমার সব কাজ আমি এমন ভাবে করব, যেন আল্লাহকে আমি আমার চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি। এ জন্য আনন্দে বেদনায়, কাজে কর্মে, হাস্য রসিকতায় আমি তাঁকেই শুধু ডাকি। তাঁর সাথেই আমার সকল কথা, সকল দুয়া, সকল অনুযোগ। মহানবী (সা) এর এ সব দুয়ার ভাষা এমন যে, তা পড়ার পরে রূহ বড় তৃপ্তি পায়। অশান্ত মন হয়ে ওঠে সুস্থির। আর গুনাহের আঁচড়ে কালো হওয়া অন্তর যেন নতুন করে আলোকিত হয়ে ওঠে। আর এভাবে একটা মন সুন্দর হয়ে যায়। রূহ হয়ে যায় শক্তিশালী। আর এ কারণে দেহে আসে অনির্বচনীয় আনন্দ সুষমা।
এটাই হলো আধ্যাত্মিকতা, ইসলামী রুহানিয়্যাৎ। ইসলামের এই আধ্যাত্মিকতা অন্যান্য আধ্যাত্মিক মতবাদ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। তাসাউউফ বলতে যা বুঝানো হয়, তার সার কথা এখানেই। একেই ইসলাম তাযকিয়াহ বা ইহসান নামে অভিহিত করেছে। ইমাম জুনায়দ বাগদাদীর ভাষায় তাসাউউফ কোন ময়লা কাপড় পরার নাম নয়, নয় পাগলের বেশ ধরা; তাসাউউফ হলো তাজরিদুল হুব্বি ইলাল্লাহ। নিজের সমস্ত ভালবাসা একমাত্র আল্লাহর কাছেই উৎসর্গ করা।